গর্জন

হ্যাঁ, আমি তোমাদের দিকেই আঙুল তুলছি
তোমরাই নিয়ে এসেছো এ’ ভয়াবহ বিপর্যয়,
তোমরাই ছিনিয়ে নিলে, ভগবানের দয়া, আশীর্বাদ
তোমাদের অহংকার, শঠতা, সবকিছু করে দিল বরবাদ। 
 
অপরাধ একটা নয়, শত শত হাজার 
বুড়ো বাবা মাকে ফেলে দিয়ে গেলে, 
প্লাটফর্মের পাশে গজিয়ে ওঠা, পূতিগন্ধময় আস্তাকুঁড়ের পাশে 
নিজেরা ঘুমিয়ে থাকো পৈতৃক বাড়িতে পরিবার নিয়ে  আয়েসে। 
 
টাকা দিয়ে চোরাপথে কিনছো কিডনি, লিভার 
সেবার ব্রতকে করেছো উলঙ্গ এক বাজারের পণ্য,
বুক ফাটা কান্নায় ভরে যাচ্ছে শহর, গ্রাম, রাজপথ, ফুটপাথ 
তোমরাই সে বীর যারা অসীম ক্ষমতায়, সমাজকে করেছো কুপোকাত।
 
অভিশাপ দারিদ্রের মাথায় নিয়ে রোজ জন্মায় কতো শিশু
ভগবান ভাবে তার কাজ মানুষই করবে ভালোবেসে,
কিন্তু হায়, ছিনিয়ে নাও তোমরা তাদের শেষ মুখের গ্রাস 
তোমাদের লোভ, লালসা বয়ে আনে ভয়াবহ এক ত্রাস।
 
উন্নয়নের সব ধাপে বিকিয়ে যাচ্ছে মানুষ 
কাজ না করে রাজনীতি আর ধর্মের নামে চালাচ্ছো রাজপাট,
ইঁট, কাঠ, পাথরে চাপা, শত, হাজার লাশ,নয়তো বা রেললাইনে মাথা কাটা 
তোমাদেরই রথের চাকা ছুটছে শুধু, বাধা দিলেই শুধু গালি, নয়তো মাথা ফাটা।
 
ছোট্ট শিশু আনমনে গড়ছে খেলাঘর 
দিনমজুর বাবা মা বাড়ি ফিরলে, পাবে সে গরম ভাত,
ধর্ষিত সেই দুধের শিশু, রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ে 
গরম ভাতে কাজ নেই তার, খেলাঘর ভাঙ্গলো ঝড়ে। 
 
অহংকারী তোমরা সবাই, ছোট বড় সব কাজে
নিজের ক্ষমতা জাহির করতে শক্ত কর চোয়াল,
‘EGO’ নামে এক সস্তা মাদক কিনে খাচ্ছো সবাই 
তার নেশাতেই অন্ধ হলে, মারাও যাচ্ছো তাই। 
 
নিলাম করে চলেছো তোমরা অনাথবৎ নাথবতীদের 
কিশোরীর হাতের কলম ছিনিয়ে, ধরিয়ে দিয়েছো কামসূত্র,
ভাড়া খাটাও ভিখারী মায়ের হা-ক্লান্ত ছেলে মেয়ে 
খিদে তবুও মেটে না তোমাদের, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা পেয়ে। 
 
মাথার উপরে বাজছে ডঙ্কা, নটরাজ আজ ধরেছে মূর্তি 
সময়ের সাথে বাঁধা আমি কাল, গুনছি প্রহর অহরহ,
পাপের ভারে ধুঁকছে পৃথিবী, হয়তো যাবে সে রসাতলে 
প্রার্থনা কর চেতনার কাছে, ঘুমিয়ে আছে যে জ্ঞানের অতলে। 
 
বনানী ——– 

Banani

Related Posts

Join the Discussion

Your email address will not be published. Required fields are marked *

arrow